|

জন্ম নিবন্ধন তৈরির ক্ষেত্রে মানতে হবে যেসকল নির্দেশনা

বর্তমানে জন্ম সনদের জন্য আবেদন কার্যক্রম সম্পাদন করা হয় অনলাইনে। তাই অনেকেই আবেদনের নিয়ম নীতি ও সঠিক দিক নির্দেশনা জানে না। এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সতর্কতা ও দিকনির্দেশনা মেনে চললে খুব সহজেই আপনি ঘরে বসে একটি সনদ তৈরি করে ফেলতে পারবেন। 

প্রাথমিকভাবে যে সকল দিকনির্দেশনা মেনে একজন সাধারন নাগরিক অনলাইনে আবেদন করতে পারবে, এবং আবেদনের পর ফি পরিশোধ করতে পারবে, এমন দিক নির্দেশনাগুলোই এই আর্টিকেলে দেওয়া হয়েছে।

সঠিকভাবে আবেদন করতে না পারলে আপনার আবেদনটি বাতিল করা হতে পারে। তাই একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এসকল বিষয়গুলো আগে থেকেই জেনে নেওয়া জরুরি ।

জন্ম নিবন্ধন তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নির্দেশনা

জন্ম সনদ আবেদনের ক্ষেত্রে যেসকল বিষয় বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হয়, সেগুলো হলো:

(১) শুধুমাত্র বাংলাদেশী নাগরিকরাই জন্ম নিবন্ধনের জন্য রেজিস্টার জেনারেল এর কার্যালয়ে আবেদন করতে পারবে। কিন্তু যদি কোন শিশুর পিতা-মাতা বাংলাদেশে হয় এবং শিশু বিদেশে জন্মগ্রহণ করে, তাহলে সেই শিশুটির জন্ম সনদ করা যাবে।

(২) পূর্বে কোন প্রকার জন্ম সনদের জন্য আবেদন করেনি কিংবা কোন প্রকার হাতে লেখার জনসনদ নেই এমন ব্যক্তিটি আবেদন করতে পারবে। অনেক সময় হাতে লেখা জন্ম সনদ রেখেও মানুষ নতুন সনদের জন্য আবেদন করে। এমতাবস্থায় সেই হাতে লেখা সনদটিও যদি কোনভাবে অনলাইনে সাবমিট করা হয়, তাহলে সেই ব্যক্তির দ্বৈত সনদ হয়ে যাবে। 

(৩) পূর্বে কোন সনদ থেকে থাকলে, নতুন সনদের জন্য আবেদন না করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে নতুনভাবে সেই সনদটি রিপ্রিন্ট করে সংগ্রহ করতে পারবেন।

(৪) আগেই কোন সনদ থেকে থাকলে এবং সেই সনদের তথ্য সঠিক না হলে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অথবা, ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করুন আগের ভুল সনদটি বাতিল করে, তারপর নতুন সনদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

(৫) ইচ্ছাকৃতভাবে একাধিক সনদের জন্য আবেদন করা বর্তমান সময়ে আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। অন্যথায় ‘জন্ম নিবন্ধন আইন’ এর নীতিমালা অনুযায়ী, এমন আইন লঙ্ঘনকারী ব্যক্তির ও নিবন্ধকের অনধিক ৫০০ টাকা, অথবা অনধিক ২ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

(৬) নতুন সনদের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে এক শব্দের নাম দিয়ে আবেদন করা যাবে না। যার জন্ম সনদের জন্য আবেদন করবেন, তার নামের কমপক্ষে দুইটি অংশ লিখতে হবে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ডাক নাম দিয়ে আবেদন করলে, সেই আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

(৭) আবেদনের সময় আবেদনকারীকে অবশ্যই সঠিক ও নির্ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে কোন প্রকার ভুল তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করতে চাইলে, এবং পরবর্তীতে তা শনাক্ত করা গেলে আইনগতভাবে শাস্তি প্রদান করতে পারে। 

(৮) নিবন্ধনকারী ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য, পিতা-মাতার তথ্য ও ঠিকানার যাবতীয় তথ্য সঠিক আছে কি-না, তা যাচাই করে আবেদন সাবমিট করতে হবে। আবেদন সাবমিট করে ফেলার পর কোন তথ্য ভুল মনে হলে, সেগুলো সংশোধনের উপায় থাকবে না। বরং আবার নতুন করে আবেদন করতে হবে। 

(৯) বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা কার্যালয় ও সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ে নানারকম জালিয়াতি ও অবৈধ সনদ সম্পর্কিত কাজ হয়ে থাকে। এর সাথে বাড়তি আবেদন ফি নেওয়ার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তাই এক্ষেত্রে রেজিস্টার জেনারেল এর কার্যালয় থেকে বর্তমানে নতুন সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে আপনি চাইলে অনলাইনে জন্ম সনদের আবেদন, সংশোধন, রি-প্রিন্ট ইত্যাদির জন্য অনলাইনে ই পেমেন্ট করে ফি দিতে পারবেন।

(১০) অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ফি ই-পেমেন্ট করার ক্ষেত্রে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে উপযুক্ত ইন্টারনেট কানেকশন রেখে সতর্কতার সাথে লেনদেন করতে হবে। এবং লেনদেনের পর প্রাপ্ত রিসিট সংরক্ষণ করতে হবে। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের সেই রিসিট জমা দিতে হবে।

এছাড়াও জন্ম সনদ করার ক্ষেত্রে আরও অনেক বিষয় রয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এমন সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়ে নিতে পারেন।

ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *